কৃত্রিম রক্ত তৈরি করছে জাপান
প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
আমাদের জীবনে মাঝে মাঝে এমন সময় আসে যখন আমাদের নিজেদের বা প্রিয়জনদের জীবন বাঁচানোর জন্য রক্তের প্রয়োজন হয়। অসুস্থতাজনিত কিংবা অপারেশন চলাকালীন সময়েই এমনটা মুলত ঘটে থাকে। কিন্তু সবসময় রক্তদাতা না পাওয়ার ফলে প্রয়োজনমাফিক রক্ত পাওয়া যায় না। এতে বিপন্ন হয় প্রাণ। কিন্তু এই বিপন্নতার দিন এবার বোধহয় ফুরোতে চলেছে। কারণ জাপান পরীক্ষাগারেই কৃত্রিম উপায়ে তৈরি করছে রক্ত। এই রক্ত দ্রুতই বিশ্বের রক্তের সংকট মেটাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রক্তের সংকট গোটা পৃথিবীতেই একটা তীব্র সমস্যা। বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসাসংক্রান্ত কাজে প্রতিদিন সারা বিশ্বে যত রক্তের চাহিদা থাকে, সে তুলনায় রক্ত সংগ্রহের পরিমাণ একেবারেই কম। জাপানেও এ সমস্যা যথেষ্ট। বিশেষ করে দেশটিতে জনসংখ্যা কমছে হু হু করে। জাপানের মোট জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশের বয়স ৬৫ বছরের ওপর। জনসংখ্যা কমে যাওয়ার একটি নেতিবাচক দিক হলো রক্তদাতার সংখ্যাও কমে যাওয়া। এ সমস্যার কথা মাথায় রেখেই পরীক্ষাগারে কৃত্রিমভাবে রক্ত তৈরির কাজ শুরু করেন জাপানি বিজ্ঞানীরা।
এ কর্মযজ্ঞের প্রধান গবেষক গেঞ্জিরো মিওয়া কৃত্রিম ব্লাডব্যাংকের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেন ২০০৮ সালে । সেই থেকে কৃত্রিমভাবে প্লেটলেট তৈরির জন্য গবেষণা শুরু করেন। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে এ গবেষণার জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন তিনি। কৃত্রিম প্লেটলেট তৈরির জন্য ২০১১ সালে তাঁর কোম্পানি মোগাকারিয়ন গঠিত হয়।
তবে এখন পর্যন্ত প্রযুক্তি ও জনশক্তি অনুযায়ী যে পরিমাণ কৃত্রিম রক্ত তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে, প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই কম। প্রতি দুই সপ্তাহে মাত্র কয়েক ইউনিট রক্ত তৈরি করা হচ্ছে। যেখানে শুধু জাপানেই বছরে আট লাখ ইউনিট রক্তের প্রয়োজন পড়ে। জাপানের ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় কৃত্রিম রক্তের উৎপাদন আরো বাড়াতে চাইছে মোগাকারিয়ন। ২০২০ সালের মধ্যে প্রয়োজনীয় উৎপাদন সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তা সত্যি হলে পৃথিবী থেকে রক্তের সংকট অনেকটাই মুছে ফেলা সম্ভব হবে। শুধু তাই নয়, রক্তবিনিময়ের মাধ্যমে এইডসের মতো যেসব মরণব্যাধি ছড়িয়ে পড়ে, তার থেকেও মুক্তি সম্ভব হবে।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া